২০০ বছরের পুরনো পিংনা রুসপাল জামে মসজিদের ছবি।
সরিষাবাড়ীর পটভূমিঃ
সরিষাবাড়ী, জামালপুর এর প্রাক ধারণা :
১) তদানিন্তর বৃটিশ শাসনামলে বর্তমান চর সরিষাবাড়ী ছিল আদি সরিষাবাড়ী। খরস্রোতা যমুনার কড়াল গ্রাসে আদি সরিষাবাড়ী বিলুপ্ত। তখন নদীর নাব্যতা ছিল, চলাচল করতো ষ্টীমার, জলজাহাজ। নদী বিধৌত চার ইউনিয়নের পিংনা, পোগলদিঘা, আওনা, কামরাবাদ এর অধিকাংশ ভূমিতেই সরিষা আবাদ হতো। বীর অঞ্চলের চারটি ইউনিয়নেও প্রচুর সরিষা আবাদ হতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে বানিজ্য করার লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা সরিষা কিনতে আসত। সে সময়কাল হতেই এই স্থানটির নাম রাখা হয় সরিষাবাড়ী। তবে -কে কবে, কোথা্য়, কোন সময়ে ও কোন তারিখে এই স্থানটির নামকরণ করেন তার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
২) যমুনা বিধৌত ঝিনাই, সুবর্নখালী বেষ্টিত এই সরিষাবাড়ী পূর্বে কাগমারী পরগনায় অবস্থিত ছিল।
৩) পাটশিল্প সমৃদ্ধ সরিষাবাড়ীতে ২২টি পাটের কুঠি ছিল। প্রায় ২২,০০০ বাইশ হাজার শ্রমিক পাটের কুঠিগুলোতে কর্মরত ছিল। বাংলাদেশের পাট ব্যবসায়ী কেন্দ্র হিসেবে নারায়নগঞ্জের পরই সরিষাবাড়ীর স্থান ছিল। আজ তা বিলুপ্তির পথে।
৪) বৃটিশ শাসনামলে সরিষাবাড়ীর ৫নং পিংনা ইউনিয়নে ফৌজদারী আদালত ছিল। কুম্ভকার সম্প্রদায় এর মাটির হাড়ি-পাতিল তৈরীতে পিংনা ইউনিয়ন এখনো বিখ্যাত। ১৮৯৬ সালে পিংনা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মহাকবি কায়কোবাদ, পিংনাতে পোস্টমাস্টার পদে থাকাকালীন অবস্থায় আযান কবিতা রচনা করেন।
৫) ডোয়াইল ইউনিয়নে প্রচুর হিন্দুদের বসবাস ছিল। ডোয়াইলের চরের মুগ ডাল ছিল প্রসিদ্ধ। বৃহত্তর ময়মনসিংহে ডোয়াইলের মুগ ডাল সোনামুগ হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল।
৬) পোগলদিঘা সরিষাবাড়ী উপজেলার সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন। এশিয়ার সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সারকারখানা সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত।
৭) মহাদান ইউনিয়নের খাগুড়িয়া গ্রামের নামানুসারে ঐতিহ্যবাহী খাগুরিয়া কালী মন্দিরের নামকরণ করা হয়েছে। সুদূর ভারত হতে এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উপাসনার জন্য আসে এবং তিনদিনব্যাপী মেলা বসে। এই মন্দিরের নামকরণ করা হয়েছে শ্রী শ্রী খাগড়িয়া কালী মাতা মন্দির। এছাড়া বছরে আরো ৪টি মাঝারী হিন্দুধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়।
৮) পুরাতন জগন্নাথগঞ্জ ঘাট ষ্টীমার ষ্টেশন ছিল। নদীর নাব্যতা হারানোর ফলে ষ্টীমার ঘাটটি বিলুপ্ত। এটি আওনা ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল।
৯) রাজনৈতিক বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় ১৩৩৫ বাংলা সনে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। বাংলাদেশের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটি একটি মানব সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান।
১০) সরিষাবাড়ী সদরে দুটি বাজার দুই দিকে অবস্থিত।একটি শিমলা বাজার ও অপরটি রামনগর বাজার। পাকিস্তান আমলের শেষের দিকে মরহুম রিয়াজউদ্দিন তালুকদার রামনগরের নাম পরিবর্তন করে আরামনগর বাজার নামকরণ করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস